বাংলাদেশে নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি বিরোধী রাজনৈতিক জোট গঠনের মূল উদ্যোক্তাদের একজন, ড: কামাল হোসেন বলছেন, বর্তমান সংবিধানিক কাঠামো এবং ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে নির্বাচনে যোগদান করতে তারা নীতিগতভাবে রাজি আছেন।
তবে বিবিসির সাথে এক সাক্ষাৎকারে ড. হোসেন স্বীকার করেন যে ,তাদের নবগঠিত জোটের শরীকদের সাথে এব্যাপারে কোন কথা হয়নি। এটি শুধুই তার দলের অবস্থান।
তিনি বলেন, “এটা একটা সিম্পল প্রভিশন। আমি মনে করি সবাই এটা বলতে দ্বিধা করবেন না। তবে এরকম কোন সিদ্ধান্ত আমরা বসে নেইনি।”
নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে আন্দোলনকারি বিএনপি যখন এই ঐক্য প্রক্রিয়ায় যোগ দিয়েছে, তখন বর্তমান সাংবিধানিক কাঠামো এবং ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিতে নীতিগতভাবে রাজি থাকার যে কথা বলছেন ড: কামাল হোসেন।
সে ব্যাপারে তিনি বলেছেন, এটি শুধু তাঁর দলের অবস্থান।
তিনি বলেছেন, “বলা হচ্ছে, তারা যেগুলো আইনে আছে, এগুলো মেনে চলবেন।যদি দেখা যায় যে, তারা এখান থেকে সরে যাচ্ছেন বা কোনো প্রভাব ফেলার চেষ্টা করছেন। তখন এটা দৃষ্টি এলে প্রথমেতো আপত্তি করা হবে যে, এটা থেকে আপনারা বিরত থাকেন। এরপরও অন্যপক্ষ যদি দেখেন যে রীতিনীতি না মেনে এটা করা হচ্ছে। তখন তো নির্বাচন বাতিল করার জন্য কোর্টে যেতে হবে।”
ড: হোসেন উল্লেখ করেন, যারা সরকারে থাকবে, নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে তাদের দায়িত্ববোধ থাকতে হবে।
“বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দ যারা আছেন, তারা যখন একটা স্বাক্ষর করবেন যে, আমরা কেউ এখানে হস্তক্ষেপ করবো না, আমরা এই প্রক্রিয়াকে একটা নিরপেক্ষ প্রক্রিয়া হিসেবে হতে দেবো,তখন আমরা ধরে নিতে পারি সরকারের পক্ষে বা আমাদের পক্ষে যারা ওথ (শপথ) নিয়ে কথাগুলো বলবেন, তাদেরতো ন্যূনতম একটা দায়িত্ববোধ থাকবে।”
“নির্বাচন কমিশন এটা রেফারি হিসেবে পরিচালনা করবে।কেউ যদি নিরপেক্ষতা থেকে সরে যায় তারা সেটা চিহ্নিত করবে এবং এটাকে অবৈধ বলবে। এগুলোতো ইলেকশন আইনেই আছে।”
জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার ব্যানারে শনিবার এই জোটের প্রথম যে সমাবেশ হয়, সেখান থেকে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরা হয় এবং আগামী ৩০শে সেপ্টেম্বরের মধ্যে সে সব দাবিদাওয়া মেনে নেয়ার আহ্বান জানানো হয়।
বিবিসির সাথে সাক্ষাৎকারে জোটের সদস্য গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন জানান যে, তাদের এই জোট কোন নির্বাচনী জোট নয়। একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি আদায়ের লক্ষ্যেই শুধু তারা একজোট হয়েছেন।
“আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন করার জোট। যেকারণে এটা দ্রুত করা সম্ভব হয়েছে।”
কিন্তু সরকারকে বিপদে ফেলে বিএনপিকে মাঠে নামার সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য এই জোট করা হয়েছে। এমন সমালোচনা আসছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে।
এই সমালোচনার ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্সণ করা হলে ড. হোসেন বলেছেন, “উনাদের আশ্বস্ত করতে পারেন যে, এ রকম কোনো চিন্তা আমাদের মাথায় ছিল না। সুষ্ঠু নির্বাচন করার লক্ষ্যে এই জোট। সরকারও এই জোটে আসতে পারে।”
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কী ধরণের পূর্বশর্ত তারা সরকারকে দিচ্ছেন? এই প্রশ্নে তিনি বলেছেন, “ভোটার লিস্ট নিরপেক্ষভাবে করতে হবে। ভোটার লিষ্ট অনুয়ায়ী সবার ভোট দেয়ার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।”
সূত্র, বিবিসি